স্টাফ রিপোর্টার : সড়ক দুর্ঘটনায় আহত এক অসহায় ব্যক্তিকে শুধু টাকার লোভে অপারেশন করে– তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে এনাম মেডিকেল কর্তৃপক্ষ।
এস এ পরিবহণের গাড়ী চালক বিল্লাল সিকাদারের মৃত্যুর ঘটনায় এমন অভিযোগ তুলেছেন তার স্বজনরা। রোগীর শরীরে পালস কম থাকা সত্ত্বেও তাকে কেন অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিলেন কর্তব্যরত চিকিৎসক এমন প্রশ্ন নিয়েই এনাম মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
তবে মুমূর্ষু রোগীকে কোন যুক্তিতে অস্ত্রপচার করার জন্য ওটি তে নেয়া হলো তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেন সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আমজাদুল হক।
এ ব্যাপারে ঢাকার সিভিল সার্জেন ডা: এহসানুল করিম বুধবার জানান, এনাম মেডিক্যালের বিরুদ্ধে চিকিৎসা গাফলতি নিয়ে একাধিক অভিযোগ রয়েছে, এগুলো নিয়ে তদন্ত কমিটিও হয়েছে কিন্ত প্রকৃত পক্ষে মেডিক্যাল কলেজ গুলো ঢাকা মহাখালীর ডাইরেক্টর হসপিটালের নিয়ন্ত্রনে থাকায় তার এখানে করনীয় কিছু থাকে না।
তবে তিনি বলেন, এনামের উক্ত ঘটনার বিষয় নিয়ে স্থানীয় সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, গত রোববার সকালে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত অবস্থায় সার্জারি ওয়ার্ডের ৪০৫ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয় এস এ পরিবহনের গাড়ী চালক বিল্লাল সিকাদরকে। ভর্তির পর বিল্লাল সিকদারের শরীরে পালস্ কম ছিল। সে পাশের উপস্থিত নার্সদের নিকট পানি ও চা খেতে চেয়েছিল। কিন্ত তাকে কোন খাবার না দিয়ে দ্রুত অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হলো।
স্বজনরা জানায়, ১ ঘন্টা পরই তাকে লাশ হয়ে ও টি থেকে বের হতে হলো। শুধু তাই নয়, নিহত বিল্লাল সিকদারের স্বজনদের হাতে লাশের সাথে ১ লাখ ২৯ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দেয় এনাম মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। এতে স্বজনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
তারা বলেন, ফরিদপুর সরকারি হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেয়া বিল্লালের স্বজনদের জিম্মি করে– মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতেই মরণ খেলায় মেতে ওঠে এনাম মেডিকেল কলেজের কতৃৃপক্ষ।
বিল্লালের মামা মো: নুরুল ইসলাম ব্যাপারী বুধবার জানান, ফরিদপুর থেকে তারা যেই এ্যম্বুলেন্স ভাড়া নিয়েছিলেন তার চালকই তাদের ফুসলিয়ে ফাসলিয়ে সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসে। যদিও তাদের রোগেিক ফরিদপুর হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তিনি বলেন, এম্বুলেন্স এর চালক এনাম মেডিক্যালের দালাল হিসেবেই এই কাজ করেছে।
এ ব্যাপারে এনাম মেডিক্যালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: তরফদার বাবু বলেন, তারা প্রায়ই এমন ঝুঁকি নিয়েই অপারেশন করে থাকেন এ জন্য তাদের স্বজনদের থেকে নো অবজেক্শন বক্তব্য সহি করা আছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে কোন লাভ হবে না বলেও দাম্ভিকতা দেখান তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে এনাম মেডিকেলের উপ-পরিচালক সংবাদ কর্মীদের হুমকি ধমকি দিয়ে তার চেম্বার ত্যাগ করেন। বিবেকবর্জিত এমন কাজের জন্য হাসপাতালটিকে কসাইখানার সঙ্গে তুলনা করেছেন গনমাধ্যম কর্মি ও এলাকাবসী।