সনজিৎ সরকার উজ্জ্বল: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা আরিচা মহাসড়কে অবস্থানকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর শনিবার বিকেলে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এতে দশ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। বর্তমানে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান গ্রহণ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ছাত্র নিহতের ঘটনায় ৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ রাস্তা অবরোধ । এতে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
সকাল থেকেই অবরোধ তুলে নিতে জাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করে আসছিল। এক পর্যায়ে অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এদিকে দুপুর ১টায় ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনদুর্ভোগ লাঘবে রাস্তা অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করেন এবং তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন ও তাদের দাবিনামায় স্বাক্ষর করেন। দাবি গুলো হলো: নিহতদের লাশ ক্যাম্পাসে কেন ঢুকতে দেওয়া হয়নি তার জবাবদিহিতা প্রশাসনকে করতে হবে, নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং নিহত আরাফাতের দুলাভাইকে যোগ্যতা অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দিতে হবে, যে গাড়িটি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে তাকে চিহ্নিত করে তার চালককে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, সিএন্ডবি থেকে বিশমাইল পর্যস্ত প্রয়োজনীয় স্পীডব্রেকার, জয় বাংলা গেটে ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণ এবং একাধিক পুলিশ বক্স স্থাপন করতে হবে, সিএন্ডবি থেকে বিশমাইল পর্যন্ত এলাকায় গাড়ির গতিসীমা সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।সাত দিনের মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
কিন্তু আশ্বাসের পরও বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় অবস্থান গ্রহণ করলে ভিসি ফারজানা ইসলাম পুনরায় তিনটার দিকে অবরোধ স্থলে এসে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধ থেকে বিরত থাকতে বলেন এবং তাদের দাবি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে আশ্বস্ত করেন।কিন্তু অবরোধকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলাকারীদের শাস্তির বিষয়ে প্রশাসনের সুস্পষ্ট বক্তব্যে আশ্বস্ত না হয়ে অবরোধকারীরা অবরোধ অব্যাহত রাখে। অবশেষে বিকেল ৫ টার দিকে পুলিশ অবরোধকারীদের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপের পর শিক্ষার্থীরা আরো বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। সংবাদ লেখা পর্যন্ত ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামকে নিজ বাসভবনে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোর ৫টায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিএন্ডবি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নাজমুল হাসান রানা ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরাফাত নিহত হন।