আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জার্মান পুলিশ বলছে, বার্লিনে ক্রিসমাস মার্কেটে লরি ঢুকে পড়ার রক্তক্ষয়ী ঘটনাটি তারা তদন্ত করছে। ঘটনাটি সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে।
ঘটনার পর সন্দেহভাজন লরিচালককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জার্মানির নিরাপত্তা সূত্রগুলো বলছে, লরিচালক আফগানিস্তান বা পাকিস্তান থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থী হতে পারেন। গত ফেব্রুয়ারিতে শরণার্থী হিসেবে জার্মানিতে আসেন তিনি। স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তি ছোটখাটো অপরাধের জন্য আগে থেকেই পুলিশের কাছে পরিচিত ছিলেন।
পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে নিয়ে সন্দেহের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্তকারীরা কাজ করছেন। পুলিশের এই বক্তব্যের আগে জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টমাস ডা ম্যাজিয়ার বলেন, বিভিন্ন আলামত ঘটনাটিকে একটি ইচ্ছাকৃত হামলা বলেই ইঙ্গিত করছে।
গণমাধ্যমের খবর ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের বিবরণ অনুযায়ী, বড়দিন উপলক্ষে বার্লিনের কেন্দ্রস্থলে বসা মার্কেটটিতে রাতের ব্যস্ততম সময়ে ঢুকে পড়ে লরিটি। ইস্পাতবোঝাই লরিটি ৫০ থেকে ৮০ মিটার ভেতরে ঢুকে যায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর পুরো এলাকা ঘিরে রাখে পুলিশ। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। জার্মানির গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, লরিটি পার্শ্ববর্তী দেশ পোল্যান্ডে নিবন্ধিত।
লরির পোলিশ মালিকের ভাষ্য, গতকাল স্থানীয় সময় বিকেল চারটা থেকে চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না তিনি। চালক নিখোঁজ ছিলেন। পুলিশের ধারণা, জার্মানির কোনো একটি নির্মাণস্থান থেকে লরিটি চুরি করা হতে পারে। এরপর সেটি বার্লিনের ওই ক্রিসমাস মার্কেটে ঢুকে পড়ে।
পুলিশ বলছে, লরির ভেতরে এক ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তিনি পোল্যান্ডের নাগরিক। এই ব্যক্তি লরির প্রকৃত চালক হতে পারেন। তিনি ছিনতাইয়ের শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঘটনার পর ভোর চারটার দিকে বার্লিনের সাবেক বিমানবন্দর টেম্পেলহোপের অস্থায়ী শরণার্থীশিবিরে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে চারজন শরণার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হতাহতের এ ঘটনায় জার্মানিতে শোক বিরাজ করছে। শোক প্রকাশ করেছেন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনাটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে আপাতত মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। হামলার জন্য ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীদের’ দোষারোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।